সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াতে লক্কর-ঝক্কর গাড়ীর ফিটনেস দিচ্ছে বিআরটিএর কতিপয় কর্তা

ভাঙ্গাচোরা গাড়ী ঘুষ নিয়ে ফিটনেস দিচ্ছে রুহুল আমিন, কর্তাদের টাকা দেওয়ায় সবাই নিরব

Passenger Voice    |    ০১:২৩ পিএম, ২০২৩-০৫-২৫


ভাঙ্গাচোরা গাড়ী ঘুষ নিয়ে ফিটনেস দিচ্ছে রুহুল আমিন, কর্তাদের টাকা দেওয়ায় সবাই নিরব

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর ঢাকা মেট্রো-২ সার্কেল অফিস যেন সড়ক দুর্ঘটনা বাড়াতে সরকারের বিপরীতে কাজ করছে। যেখানে বিআরটিএ সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানে কতিপয় মোটরযান পরিদর্শক পুরাতন লক্কর-ঝক্কর গাড়ীর মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে চলাচলের ফিটনেস প্রদান করছে। এভাবে গত ৯ মে ১৯৭৭ সালের তৈরিকৃত একটি লক্কর-ঝক্কর অয়েল ট্যাংকার গাড়ির ফিটনেস দেয় বিআরটিএ’র ঢাকা মেট্রো-২ সার্কেল অফিসের মোটরযান পরিদর্শক রুহুল আমিন। রুহুল আমিনের ধারনা ফিটনেস প্রদানে যে ঘুষ বাণিজ্যের লেনদেন হয়ে থাকে সেটার একটি অংশ সার্কেলের উপ-পরিচালক (ইঞ্জিঃ) ও বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তার পকেটে যায়। সেহেতু এমন অনিয়মে বিআরটিএর চেয়ারম্যান তার কিছুই করতে পারবে না। 

তবে প্যাসেঞ্জার ভয়েসের সূত্র বলছে, ঘুষ নিয়ে পরিদর্শন না করে ফিটনেস প্রদানকারী কর্মকর্তাদের ছাড় দেয়না বিআরটিএর বর্তমান চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। সাম্প্রতিক সময়ে ঘুষ নিয়ে পরিদর্শন ছাড়া গাড়ীর ফিটনেস প্রদান করায় নারায়নগঞ্জ বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ তোহা ও বরিশাল বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক প্রনব চন্দ্র নাগকে সাময়িক চাকরী থেকে বহিষ্কার করেছেন। 

ঘুষের বিনিময়ে ভাঙ্গাচোরা লক্কড় ঝক্কর মোটরযানের ফিটনেস দিচ্ছে একদিকে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ২০ (১)(ক) ধারা অনুযায়ী মোটরযান রেজিষ্ট্রেশন ও ফিটনেস প্রদানকালে মোটরযানের সাথে মোটরযান পরিদর্শকের স্থিরচিত্র ধারণ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানছে না মোটরযান পরিদর্শক রুহুল আমিন ।

বিআরটিএর চেয়ারম্যানের আরেক আদেশে বলা আছে রুট পারমিট এর শর্ত ভঙ্গ করে কোন গাড়ী বিআরটিএর অন্য সার্কেল অফিসে ফিটনেস প্রদান করতে পারবে না। সেই হিসেবে ১৯৭৭ সালে তৈরিকৃত নারায়নগঞ্জ-ঢ-০১-০০৮১ নং এই মোটরযানটি চলাচলের রুট পারমিট ছিল শুধু নারায়নগঞ্জ জেলায়।

সূত্র বলছে, সদ্য বিদায়ী বছরের ১৫ মার্চ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার এসআই (নিরস্ত্র) ফেরদৌস হোসেন এর নেতৃত্বে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চট্টমেট্রো-ন-১১-২৬০৮ নং গাড়ি সহ একটি ডাকাত দলকে আটক করে পুলিশ। পরে একই দিন সন্ধ্যায় পেনাল কোর্ট তৎসহ ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(f) এর  ৩৯৯/৪০২ ধারা মতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং-১৯। মামলাটি কুমিল্লার আমলী আদালত নং-৯ এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে বিচারাধীন । সংবাদ লিখা পর্যন্ত চট্টমেট্রো-ন-১১-২৬০৮ নং গাড়িটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় জব্দ রয়েছে। তবে এই গাড়িটি টাকার বিনিময়ে ফিটনেস সনদ ইস্যু করেছিল বরিশাল বিআরটিএর সাবেক মোটরযান পরিদর্শক প্রণব চন্দ্র নাগ। সেই অপরাধে বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত আছেন এই মোটরযান পরিদর্শক।

অন্যদিকে গতবছর ময়মনসিংহের ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ও ছয় বছর-বয়সী মেয়ের সাথে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে যাচ্ছিলেন নয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ত্রিশালের রায়মনি গ্রামের রত্না বেগম। অনাগত সন্তানের শারীরিক অবস্থা কেমন আছে তা জানতে কাছেই একটি ক্লিনিকে আলট্রাসাউন্ড করাতে যাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন পরিবারের সবাই। ঘটনাস্থলেই সকলের মৃত্যু হলেও এই দুর্ঘটনায় বেঁচে গেছে কয়েক মুহূর্ত আগ পর্যন্ত মাতৃগর্ভে থাকা শিশুটি। দুর্ঘটনা সংঘঠিত গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো-ট-২০-৩৫৮০) ফিটনেস দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত আছে নারায়নগঞ্জ বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ তোহা।

বিস্তারিত আসছে ২য় পর্বে......